বিদেশি অনুদান কিভাবে পাবো 2024
বাংলাদেশ থেকে সরাসরি বিদেশি অনুদানের জন্য আবেদন করা যায় না। বিদেশি অনুদান পাওয়ার জন্য Canada, Germany, Italy, UK, USA তে অবস্থানরত কোন আত্নীয় বা বন্ধুর মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
ব্যক্তিগত অতি প্রয়োজনে অথবা আশেপাশে কারোর শিক্ষা, চিকিৎসা, দরিদ্রতা, প্রতিবন্ধীতা, অসহায়ত্বের জন্য কিংবা বিভিন্ন জনসেবামূলক চ্যারিটি সহায়তার জন্য বিদেশি অনুদান কিভাবে পাবো তা অনেকেই জানতে চান।
বর্তমানে বিশ্বের সেরা বিদেশি অনুদান প্রদানকারী সংস্থাগুলোর ওয়েবসাইটে বাংলাদেশ থেকে ফান্ডের জন্য আবেদন করা যায় না। কারন, বাংলাদেশের অনেকেই এ ধরনের সহায়তা সংস্থাগুলোর অপব্যবহার করতে চায়।
তবে সে সকল সাইট থেকে বাংলাদেশ কে ব্যান করে দেওয়ায় বিদেশি কোন আত্নীয়, বন্ধু-বান্ধবের মাধ্যমে অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
বাংলাদেশ থেকে বিদেশি অনুদান কিভাবে পাবেন, বিদেশি অনুদান সাইটসমূহ, কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন, কত টাকা পাওয়া যায়, বাংলাদেশ থেকে কিভাবে অনুদান পাওয়া যায় তা নিয়ে আজকের বিস্তারিত আলোচনা।
বিদেশি অনুদান কি?
অসহায় মানুষদের সহায়তার কাজে বিভিন্ন জনকল্যান মূলক ব্যয় বরাদ্দ ও প্রদান করা হলে তাকে অনুদান বলা হয়। বিদেশ থেকে এমন অনুদান পাওয়া হলে তা বিদেশি অনুদান নামেই পরিচিত।
অতি প্রয়োজনীয় কোন কারনে বিভিন্ন বিদেশি ডোনেশন প্রতিষ্ঠান ও ওয়েবসাইটে নিজের প্রয়োজন বা সামাজিক উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে আর্থিক অনুদানের জন্য আবেদন করতে হয়। স্বহৃদয়বান অনেকেই সেই আবেদনের বিপরীতে ডোনেশন দিয়ে থাকে। এবং পরবর্তীতে সেই ওয়েবসাইট থেকে ব্যাংক একাউন্টে অনুদান সংগ্রহ করা যায়।
বর্তমান অনুদান হিসেবে- শিক্ষা, অসহায়ত্ব, চিকিৎসা, প্রতিবন্ধী কিংবা সেবামূলক সংগঠন গুলো চ্যারিটি খাতে অনুদান পেয়ে থাকে।
বিদেশি অনুদান সাইটগুলো কি কি
বিদেশি অনুদান প্রদান করে থাকে এমন অনেক সাইট রয়েছে। একেকটি সাইট ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে অনুদান প্রদান করে থাকে। কয়েকটি বিদেশি অনুদান সাইট হলো-
- GoFundMe – Personal and Charity fundraising website.
- Air Funding – Personal, Community, and Charity fundraising website.
- Crowdfunder – Medical and Social cause fundraising website.
- Charity Navigator – Direct Relief, a top-rated humanitarian charity fundraising website. It works in the USA and Internationally to provide lifesaving medical resources.
- Global Giving – charities/ social enterprise fundraising website.
- Paypal – Charity fundraising website. raises funds through PayPal, eBay, and other platforms.
এছাড়াও আরও অনেক সাইট থেকে বিদেশি অনুদান সংগ্রহ করা যায়।
বিদেশি অনুদান কিভাবে পাওয়া যায়
বাংলাদেশ থেকে সরাসরি বিদেশি অনুদানের জন্য আবেদন করা যায় না। Canada, Germany, Italy, Uk, USA ইত্যাদি উন্নত রাষ্ট্রে থাকা কোন আত্নীয় বা বন্ধুর মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।
আপনার বিশেষ কোন বিপদে বা প্রয়োজনে আপনার বন্ধু সে সাইটে আবেদন করল যে- আমার বন্ধুর কিডনি ফেইলিউরে চিকিৎসার জন্য ফান্ড রাইসিং, তাহলে অনুদান পেতে পারেন। Gofundme থেকে বন্ধুর মাধ্যমে বিদেশি অনুদান কিভাবে পাওয়া যাবে তা জানা যাক-
প্রথমেই একটি ব্রাউজার থেকে Gofundme লিখে সার্চ করে প্রথম সাইট টিতে প্রবেশ করতে হবে। তারপর Start a GoFundMe তে ক্লিক করে একাউন্ট রেজিস্টার করে নিতে হবে।
তারপর নিজ দেশ ও ZIP কোড দিয়ে কোন ধরনের অনুদান নিতে চান তার Category সঠিকভাবে সিলেক্ট করতে হবে। সঠিক ক্যাটাগরি এবং সঠিক প্রয়োজন সিলেক্ট না করলে অনুদান ওয়েবসাইট একাউন্টে আসলেও তা কেটে নেওয়া হবে।
এবার আপনি আবেদন করবেন যেমন- বাংলাদেশি বন্ধুর চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা। তাহলে বন্ধু চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে এমন প্রমানপত্র বা ছবি আবেদনের সাথে সংযুক্ত করে সঠিক ক্যাটাগরিতে পোস্ট করতে হবে। কত টাকার প্রয়োজন ও কত দিনের মধ্যে লাগবে তা নির্ধারন করে দিতে হবে।
পোস্ট করার পর Facebook, Twitter, Instagram সহ বিভিন্ন Social Media তে বেশি বেশি শেয়ার করতে হবে। আপনি আবেদনটি যত বেশি শেয়ার হবে আপনার অনুদান পাওয়ার সম্ভাবনা ততই বৃদ্ধি পাবে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের কোন সমাজ বা জনগনের বিপর্যস্ত অবস্থায় বা দরিদ্রতা প্রতিকারে Charity Fund তৈরির জন্য আবেদন করা যাবে। অবশ্যই সঠিক তথ্য হাতে নিয়ে আবেদন করতে হবে। কোন ব্যক্তিগত প্রয়োজনে বর্তমানে এসব সাইট থেকে অনুদান প্রদান করা হয় না।
ক্যাটাগরিতে চ্যারিটি জাতীয় আবেদনে Charity সিলেক্ট করতে হবে এবং পার্সোনাল বিপর্যস্ত অবস্থার জন্য Personal সিলেক্ট করতে হবে। বর্তমানে চ্যারিটি খাতে সহজেই বিদেশি অনুদান পাওয়া যায়। তবে তার জন্য প্রয়োজন হয় একটি সংগঠনের তথ্য।
চ্যারিটি ফান্ডের জন্য বিদেশি অনুদান কিভাবে পাবেন ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্কে চলুন জেনে নিই-
বিদেশি অনুদান পেতে কি কি কাগজপত্র লাগে?
কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে প্রয়োজনের সময় সাহায্যের উদ্দেশ্যে অনুদান চাইলে, সেই ব্যক্তির পরিচয়, ব্যাংক তথ্য, অসুস্থ হলে সে অবস্থার ছবি ইত্যাদি সাধারন তথ্যের প্রয়োজন হয়। তবে চ্যারিটি সংগঠনের জন্য বিশাল পরিমান অনুদানের আবেদন করলে বেশ কিছু ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হয়। সেগুলো হলো-
- একটি অরিজিনাল সংগঠন ও তার অনুমোদন পত্র;
- সংগঠনের নামে একটি ইমেইল এড্রেস;
- সংগঠনের নিজস্ব ওয়েবসাইট;
- সংগঠনে আপনার পোস্ট ও তার প্রমানপত্র হিসেবে স্টাফ তালিকার লিস্টের লিংক;
- সংগঠনের Bank Account Statement;
- সংগঠনের পূর্বের কোন Charity Project বা কার্যক্রমের ছবি ও প্রমানপত্র;
- গত ৩ মাসের মধ্যে সংগঠনের একটি মিটিংয়ে আপনার অবস্থান সহ ছবি।
এছাড়াও আপনার ব্যক্তিগত পরিচয়ের তথ্য দিয়ে করে বিদেশি অনুদান পাওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।
বিদেশি অনুদান কত টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়?
বিদেশি অনুদান প্রদানকারী সাইট গুলো থেকে যেকোন পরিমান আর্থিক সহায়তা পাওয়া সম্ভব। সঠিক ক্যাটাগরির উপর নির্ভর করে আপনার প্রয়োজনের পরিমান উল্লেখ করে আবেদন করলে ৫০০$, ১,০০০$, ৫,০০০$, ১,০০,০০০$ বা তারও বেশি অর্থের জন্য অনুদানের আবেদন করা যায়।
আসল বিষয় হলো খুবই তাড়াতাড়ি সেই অর্থ ফান্ডিং হয়ে যায়। কিন্তু আবেদনের জন্য সঠিক তথ্য প্রদান করতে না পারলে ফান্ডিং হওয়া অর্থ সেই সাইট রিফান্ডিং করে কেটে নিবে। তাই বিদেশি অনুদান নেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই সততা ও সঠিক তথ্য শেয়ার করতে হবে।
আরও পড়তে পারেন:
বাংলাদেশ থেকে কিভাবে বিদেশি অনুদান পাওয়া যায়?
ব্যক্তিগত প্রয়োজনে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি বিদেশি অনুদান পাওয়া যায় না। তবে বিদেশে থাকা কোন আত্নীয়ের মাধ্যমে আবেদন করলে ব্যাংক একাউন্ট বা Paypal এর মাধ্যমে অনুদান নেওয়া যায়।
বাংলাদেশ সরকার বিদেশি অনুদান নেওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। তাই ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে অনুদান থেকে প্রাপ্ত টাকা আনলে তা ট্রেক করা হয়। তবে Paypal একাউন্ট ব্যবহার করে সহজেই এই সাইটগুলো থেকে কোন ঝামেলা ছাড়াই লেনদেন করা যায়।
বাংলাদেশ থেকে Paypal একাউন্ট খোলা যায় না বলে বিভিন্ন বিদেশি বন্ধুর মাধ্যমে তা ভেরিফাই করে ব্যবহার করতে পারবেন।
FAQ’s
GoFundMe, Air Funding, Crowdfunding, Paypal, Global Giving, Charity Navigator সহ আরও বেশ কয়েকটি সাইট থেকে বিদেশি অনুদান পাওয়া যায়।
বিদেশি অনুদান সাইট গুলোতে বাংলাদেশ ব্যান হওয়ায় বিভিন্ন উন্নত রাষ্ট্রের বন্ধু বা আত্নীয়ের সাহায্যে বিদেশি অনুদানের জন্য আবেদন করা যায়। সঠিক ক্যাটাগরিতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস দিয়ে আবেদন করার পর বেশি বেশি শেয়ার করে ফান্ড কালেক্ট হলে Paypal বা ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে বিদেশি অনুদান পাওয়া যায়।
ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে কয়েক লক্ষ থেকে কোটি পর্যন্ত বিদেশি অনুদান পাওয়া যায়। চ্যারিটি ফান্ডের ক্ষেত্রে এ সুবিধা পাওয়া যায়।
শেষকথা
অতি প্রয়োজনীয় কোন কারনে বা সমাজ কল্যানে বিদেশি অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে এর স্বার্থ সুযোগ নিয়ে অপব্যবহার করলে দেশের সম্মানহানী হয়। তাই সকলেই সৎ পন্থা অবলম্বন করতে হবে।
আজকের আলোচনা থেকে বাংলাদেশ থেকে বিদেশি অনুদান কিভাবে পাওয়া যায় তা সম্পর্কে জানতে পারলাম। পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মতামত কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এরকম উপকারী লেখা পেতে নিয়মিত ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট, ধন্যবাদ।