মাসে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করার সেরা ১০ উপায়
মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করতে চান? সময় উপযোগি সেরা উপায়গেুলো দেখতে পারেন।
অনলাইনে টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় নিয়ে সার্চ করেন না এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বর্তমানে ঘরে বসে টাকা আয় করার অনেক অনেক উপায় রয়েছে তবে।
এই ব্লগে আমি মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করার কয়েকটি উপায় এবং সহজ ও দীর্ঘমেয়াদী ভাবে অনলাইন থেকে কিভাবে আয় করবেন সে উপায় গুলো নিয়ে আলোচনা করব।
মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করার সেরা উপায়সমূহ
মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করার কয়েকটি উপায় হচ্ছে,
- কোর্স সেলিং
- স্ট্রিট ফুড ভ্যান;
- হোম লন্ড্রি সার্ভিস;
- ব্লগিং;
- এফিলিয়েট মার্কেটিং;
- লাঞ্চ প্রোভাইডিং বিজনেস;
- রিপেয়ার সার্ভিস;
- কাস্টমাইজড গিফট সেলিং;
- ইউটিউব/ফেসবুক মনিটাইজেশন ইত্যাদি।
এছাড়াও মাসে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করার জন্য অনেক উপায় রয়েছে, তবে আপনার জন্য কোনটি উপযোগি হবে, তা নির্ভর করবে আপনার যোগ্যতা, সামর্থ্য ও ইচ্ছার উপর।
আরও পড়তে পারেন:
আপনার শিক্ষাগত অথবা প্রযুক্তিগত যোগ্যতার উপর অনেক কিছু নির্ভর করে থাকবে। যেমন, ইউটিউব থেকে আয় করার জন্য আপনাকে কোন বিষয়ে ভাল নলেজ এবং ভিডিও তৈরিতে দক্ষতা প্রয়োজন হবে।
আবার ব্লগিং, ফ্রিল্যান্সিং, এফিলিয়েট মার্কেটিং এসব সেক্টরে অনেক টাকা আয় করা গেলেও, এক্ষেত্রে আপনার বিভিন্ন ধরনের Skill শেখা ও প্রচুর সময় ব্যয় করতে হবে। মনে রাখবেন, শুধুমাত্র টাকার দিক বিবেচনা করলেই হবে না। এখানে আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে শ্রম, সময় এবং ধৈর্য বিনিয়োগ করতে হবে।
আসুন প্রতিমাসে ৩০,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকার বেশি ইনকাম করার কয়েকটি সময়োপযোগি উপায় এবং কিভাবে এগুলো শুরু করতে পারেন তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
১. কোর্স সেল করে ইনকাম
আপনার কোন বিষয়ে ভাল স্কিল থাকলে, তা শেখানোর জন্য একটি কোর্স তৈরি করে সেটি সেল করতে পারেন। যেমন কুকিং, ইংরেজি শেখা, Academic Course, Computer যেকোন বিষয়ে কোর্স তৈরি করে সেল করা যায়। বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম যেমন- ফেসবুক, নিজস্ব ওয়েবসাইট, ইউটিউব এগুলোর মাধ্যমে আপনি কোর্সগুলো সেল করে ইনকাম করতে পারবেন।
আপনার যে বিষয়ের উপর দক্ষতা রয়েছে সেই বিষয়ের উপর শিক্ষামূলক ভিডিও তৈরি করে সেগুলোকে কোর্স আকারে সাজিয়ে একটি ভিডিও সিরিজ তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন। অথবা আপনার কোর্সের সাথে সম্পর্কিত একটি ইবুক তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন।
যদি আপনার কোর্সে ভাল কিছু দিতে, পারেন কোর্স সেল করা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।
২. স্ট্রিট ফুড ভ্যান
রাস্তার ধারে ভ্যানে বিক্রি হওয়া ফাস্টফুড খেতে কে না পছন্দ করে? রাস্তার পাশে ফুড ভ্যানে বেশি চাহিদা সম্পন্ন খাবার হচ্ছে চটপটি, ফুচকা, ফ্রাইড চিকেন, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, বার্গার, কফি, কোল্ড কফি, ফলের জুস, নুডলস প্রভৃতি। এ খাবার গুলো বেশিরভাগই রান্না করা সহজ এবং এ খাবার গুলোর ক্ষেত্রে ক্রেতার কখনো অভাব হয় না। তাই স্ট্রিট ফুড ভ্যান আপনার জন্য একটি লাভজনক ব্যবসা হতে পারে। প্রয়োজন-
- রান্না করতে পারা
- রান্নার সামগ্রী কেনার জন্য প্রয়োজনীয় মূলধন
- একটি ভ্যান
আপনার রান্না ভালো হলে দিনে অন্তত ২০০০ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। বাজার, স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পাশে জায়গা করে নিতে পারলে আপনাকে আর পেছনে ফিরে দেখতে হবে না। স্ট্রিট ফুড ব্যবসা থেকে প্রতিমাসে কম করে হলেও ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করা খুব স্বাভাবিক।
৩. জুস বার অথবা পিঠা ঘর
বিভিন্ন ফলের জুস বানিয়ে শুরু করতে পারেন জুস বারের ব্যবসা। কমলা লেবু, আপেল, ডালিম, আম, তরমুজ সহ বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন ফলের জুস বানিয়ে বিক্রি করতে পারেন। স্বাস্থ্যকর খাদ্য হিসেবে ফলের জুসের চাহিদা অনেক বেশি।
শীতকালে, বিভিন্ন ধরনের পিঠার চাহিদা থাকে। এসময়, বিভিন্ন ধরণের পিঠা বিক্রয় করতে পারেন।
এজন্য যা প্রয়োজন হবে:
- জনসমাগম পূর্ণ স্থানে দোকান/ ফুটপাতের স্পেইস;
- ফল কেনার জন্য পর্যাপ্ত মূলধন রাখা;
- একটি ব্লেন্ডার মেশিন;
- পিঠা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম
বিভিন্ন মার্কেট ,স্কুল কলেজ ,মেডিকেলের সামনে একটি ছোট্ট দোকানে জুসের ব্যবসা সহজে শুরু করতে পারেন। এই জায়গা গুলোতে জুস বেশি বিক্রি হবে।
৪. হোম লন্ড্রি সার্ভিস ব্যবসা
ব্যস্ত চাকরিজীবীদের জামা কাপড় পরিপাটি রাখার জন্য লন্ড্রি সার্ভিস একমাত্র ভরসা। সেই সাথে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্ম ঘন ঘন লন্ড্রিতে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হয়।
কিন্তু আজকাল কর্মব্যস্ততার কারণে কাপড় চোপড় লন্ড্রিতে দিয়ে আসা ও নিয়ে আসার সময়ও অনেকের হয় না। তাছাড়া বাসার আসে পাশে লন্ড্রী না থাকলে তো আরও অসুবিধা।
এক্ষেত্রে, আপনি বাসা থেকেই কাপড় চোপড় সংগ্রহ করে, ওয়াশ করে আবার বাসায় ডেলিভারি করার সুবিধা নিয়ে লন্ড্রী সার্ভিস শুরু করতে পারেন। বর্তমানে প্রায় সব এলাকাতেই এমন সেবার চাহিদা বাড়ছে।
এজন্য, আপনার কোন দোকান ভাড়া নেয়ারও প্রয়োজন হবে না। আপনার বাড়ি থেকেই এই হোম লন্ড্রী সার্ভিস শুরু করা যাবে। তবে এজন্য, কাপড় ধোয়া ও শুকানোর জন্য খোলামেলা জায়গা ও রোদের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
হোম ডেলিভারী সার্ভিস ব্যবসা শুরু করতে আপনার বিনিয়োগ করতে হবে যেসব জিনিসে:
- ওয়াশিং মেশিন
- ২টি আয়রন মেশিন
- ১টি ডেলিভারী বাইক
অন্যান্য ব্যবসার তুলনায় হোম লন্ড্রি সার্ভিস ব্যবসায় তেমন কোনো মূলধনের প্রয়োজন পড়ে না। তাই আপনি সহজে এটা শুরু করতে পারবেন।
৫. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
সহজ কথায় Affiliate Marketing বলতে কোন ই-কমার্স ওয়েবসাইটের পণ্যগুলো আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে প্রমোশন করা। আপনার প্রোমোশন করার মাধ্যমে যদি কোন বিক্রয় হয়, বিক্রয়মূল্যের উপর আপনি নির্দিষ্ট হারে কমিশন আয় করবেন।
বিশ্বের জনপ্রিয় সব ই-কমার্স সাইট, Amazon, Ebay, AliExpress, Walmart, Etsy সহ বাংলাদেশের Daraz, Rokomari সব প্রতিষ্ঠানেই এফিলিয়েট প্রোগ্রাম রয়েছে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে আপনার টাকায় বিনিয়োগ নয়, কিন্তু আপনার দক্ষতা অর্জনে বিনিয়োগ করতে হবে। আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কিছু ধারণা থাকতে হবে। পাশাপাশি, ব্লগিং, ইউটিউব ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মার্কেটিং করার কৌশল শিখতে হবে।
একজন এফিলিয়েট মার্কেটার হিসাবে আপনাকে যেকোনো একটি এফিলিয়েট প্রোগ্রামে register করতে হবে এবং তাদের বিভিন্ন পণ্যের প্রচার অর্থাৎ মার্কেটিং করতে হবে।
আপনি যে ওয়েবসাইটের পণ্যগুলো মার্কেটিং করবেন সে পণ্যগুলোর affiliate link বিভিন্ন মাধ্যমে আপনাকে প্রচার করতে হবে।
যখন কেউ এই লিংক ক্লিক করবে তখন তাকে সেই প্রোডাক্ট পেজে নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর পণ্যটি কিনলে আপনি কমিশন পাবেন। এভাবে প্রতিটি সেল এর জন্য আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা commission পাবেন। বিভিন্নভাবে পণ্যগুলোর affiliate link প্রচার করা যায় যেমন-
- ব্লগিং: আপনার নিজের ব্লগিং ওয়েবসাইট থাকলে সেখানে পন্যের অ্যাফিলিয়েট লিংক শেয়ার করতে পারেন। সেখানে কনটেন্ট এর মাঝে পণ্যের অ্যাফিলিয়েট লিংক শেয়ার করতে পারেন। খেয়াল রাখবেন যেন আপনার কন্টেন্টের সাথে পন্যটি সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
- ইউটিউব: আপনি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের যে পণ্যগুলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চান সেগুলো নিয়ে একটি ভিডিও বানান এবং ভিডিওর ডেসক্রিপশনে অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক দিন।
- সোশ্যাল মিডিয়া: আপনি একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করে সেখানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে পণ্যের প্রচার করতে পারেন এবং এফিলিয়েট লিংক শেয়ার করতে পারেন। মূলত এফিলিয়েট মার্কেটিং করার সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং।
- পেইড অ্যাডভার্টাইজিং: গুগল অ্যাডসেন্স, ফেসবুক অ্যাড ইত্যাদির মাধ্যমে আপনার অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক প্রচার করতে পারেন কিন্তু এক্ষেত্রে আপনাকে টাকা দিয়ে এই অ্যাডগুলো প্রচার করতে হবে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য কয়েকটি নির্ভরযোগ্য ও জনপ্রিয় সাইট হল-
Amazon Associates
Amazon Associates হল Amazon-এর এফিলিয়েট প্রোগ্রাম। আপনি আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগে Amazon-এর কোনো পণ্যের বিষয়ে কনটেন্ট তৈরি করে Affiliate Link দিয়ে ভিজিটরদের Amazon-এ নিয়ে যাবেন। যদি কেউ আপনার এফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে গিয়ে কেনাকাটা করে, তাহলে আপনি সেই কেনাকাটার একটি নির্দিষ্ট অংশ কমিশন হিসেবে পাবেন।
Amazon Associates এর সুবিধা
- বিশাল পণ্যের ভান্ডার: প্রায় সব ধরনের পণ্যই Amazon এ পাওয়া যায়, ফলে আপনার নির্দিষ্ট নিশা সম্পর্কিত পণ্য খুঁজে পাওয়া সহজ।
- High Conversion Rate: Amazon একটি বিশ্বাসযোগ্য ব্র্যান্ড, ফলে আপনার সাইটের ভিজিটররা Amazon লিঙ্কের মাধ্যমে কেনাকাটা করতে অনেক বেশি আগ্রহী হবেন।
- বিস্তারিত রিপোর্টিং: আপনি আপনার আয়, ক্লিক এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মেট্রিকস সহজেই ট্র্যাক করতে পারবেন।
eBay Partner Network
eBay Partner Network eBay-এর এফিলিয়েট প্রোগ্রাম। এটি Amazon Associates-এর মতোই কাজ করে। আপনি eBay-এর কোনো পণ্যের লিঙ্ক দিয়ে দর্শকদের eBay-এ নিয়ে যাবেন এবং যদি কেউ আপনার লিঙ্কের মাধ্যমে কেনাকাটা করে, তাহলে আপনি কমিশন পাবেন।
eBay Partner Network এর সুবিধা
- বিভিন্ন ধরনের পণ্য: eBay-এ নতুন এবং ব্যবহৃত উভয় ধরনের পণ্যই পাওয়া যায়।
- আন্তর্জাতিক বাজার: আপনি বিশ্বের যে কোনো দেশের ক্রেতাদের টার্গেট করতে পারবেন।
- সিজোনাল পণ্য: উৎসবের সময় বা বিশেষ ঘটনার সময় আপনি সিজোনাল পণ্যের উপর ফোকাস করে ভালো আয় করতে পারবেন।
Etsy Affiliate Program
Etsy Affiliate Program Etsy-এর এফিলিয়েট প্রোগ্রাম। এটি হ্যান্ডমেড, ভিনটেজ এবং কাস্টমাইজড পণ্য বিক্রয় করার জন্য একটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম।
Etsy-এ সাধারণত অন্যান্য ইকমার্স প্ল্যাটফর্মের তুলনায় উচ্চ মূল্যের পণ্য পাওয়া যায়, ফলে আপনি প্রতিটি বিক্রয় থেকে বেশি কমিশন পেতে পারেন।
BD Shop
এটি একটি কমার্স ওয়েবসাইট এখানে মূলত ইলেকট্রনিক জাতীয় পণ্য বিক্রি হয়ে থাকে। এই ওয়েবসাইটের পণ্যগুলোর অ্যাফিলিয়েট লিংক এর মাধ্যমে আপনি অনায়াসে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
প্রথমদিকে ইনকাম কম হবে। তবে অভিজ্ঞতা বাড়ার সাথে সাথে ইনকাম বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যত বেশি বিক্রি হবে আপনার ইনকাম তত বাড়বে।
- কোনো গ্রাহক আপনার এফিলিয়েট লিঙ্ক দিয়ে ভিজিট করার ৩০ দিনের মধ্যে কোনো পণ্য অর্ডার করলেও আপনি কমিশন পাবেন।
- প্রতিটি প্রোডাক্টের জন্য ৩-৭% কমিশন পাওয়া যাবে। এবং প্রতি সপ্তাহে পেমেন্ট নিতে পারবেন।
Sohoj Affiliates
বাংলাদেশের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং জব এর ক্ষেত্রে সবথেকে জনপ্রিয় সহজ এফিলিয়ৈটস। Sohoj Affiliates সহজ বাই (Sohojbuy.com) অনলাইন শপ বা ই-কমার্স সাইটের পার্টনার প্রোগ্রাম। প্রতিটি প্রোডাক্ট বিক্রির জন্য লেভেল অনুসারে কমিশন দেওয়া হয়ে থাকে। ফ্রীতে যে কেউ Sohoj Affiliates এ জয়েন করতে পারবেন। তাছাড়া আপনি রেফার করেও ইনকাম করতে পারবেন।
10 Minute School এফিলিয়েট প্রোগ্রাম
টেন মিনিট স্কুলে বিভিন্ন এডুকেশনাল কোর্স বিক্রি হয়ে থাকে। আপনার শেয়ার করা টেন মিনিট স্কুলের অ্যাফিলিয়েট লিংকটি ব্যবহার করে কোর্স কেনা হলে আপনি কোর্সের মূল্যের ১৫% কমিশন পেয়ে যাবেন। 10 minute school Affiliate Program এ join হতে পারেন এই লিংক থেকে – 10 Minute School Affliate Program।
রকমারি এফিলিয়েট
রকমারি (Rokomari) বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ই-কমার্স ওয়েবসাইট। এখানে বই খাতা থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় প্রত্যেকটি জিনিস বিক্রি করা হয়। বিভিন্ন প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারলে বিভিন্ন পার্সেন্টেজের কমিশন দেওয়া হয়ে থাকে।
তবে মনে রাখা প্রয়োজন আপনার দেওয়া রকমারি এফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করে কেউ যদি তিন দিনের মধ্যে পণ্য কিনে তাহলে আপনি কমিশন পাবেন। রকমারি এফিলিয়েটে জয়েন করতে পারেন এখান থেকে – Rokomari Affiliate।
৬. টিউশন করে ইনকাম
অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইটে টিউশন জব পাওয়া যায়। অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে যে টিউশন জব গুলো পাওয়া যায় তার সাধারণত ২ প্রকার হয়, অনলাইনে পড়ানো এবং বাসায় গিয়ে পড়ানো।
কিন্তু অনলাইন হোক বা অফলাইন, এসব টিউশন বিভিন্ন মিডিয়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পাবেন। অনলাইনে টিউশন জব পাওয়ার জন্য নির্ভরযোগ্য এবং বিশ্বাসযোগ্য প্ল্যাটফর্ম গুলো হলো:
- Teacher On
- Turoriaa
- Turtor Sheba
- Desh Tutor
Teacher on
Teacher on ওয়েবসাইটটিতে সবচেয়ে বেশি টিউশন জব পাওয়া যায়। এটি একটি আন্তর্জাতিক টিউশন জব ওয়েবসাইট।
- এই ওয়েবসাইটটি সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এখানে অন্যান্য ওয়েবসাইটের চেয়ে দ্রুত জব পাওয়া সম্ভব।
- এছাড়া অনলাইন ভিত্তিক টিউশন জব গুলো বেশি পরিমাণে থাকে।
- এখানে নির্দিষ্ট কোন টিউশন জব পেতে টাকা দিয়ে কয়েন কিনতে হয় এবং সে কয়েন দিয়েই টিউশন জবের জন্য আবেদন করা যায়। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের টিউশন জব পাওয়া যায়।
- এখানে ইংরেজি মিডিয়াম ও ইংরেজি ভার্সনের টিউটরদের চাহিদা বেশি।
Tutoriaa
Tutoriaa এই ওয়েবসাইটটিতে অনেক বেশি টিউশন জব রয়েছে। এখানে আপনার লোকেশন সেট করে দিলে আপনার বাড়ি থেকে সবচেয়ে নিকটবর্তী স্থানের টিউশন জব গুলো দেখতে পাবেন এবং আবেদন করতে পারবেন।
Tutor Sheba
Tutorseba টিচার ওয়ান ওয়েবসাইটের মতো টিউটর সেবা একটি জনপ্রিয় টিউশন জব পাওয়ার ওয়েবসাইট। এখানে অনলাইন এবং অফলাইন উভয় ধরনের টিউশন জব পাওয়া যায়।
Desh Tutor
Desh Tutor একটি বাংলাদেশি টিউশন জব ওয়েবসাইট। এখানে গ্রুপ ভিত্তিক এবং প্যাকেজ ভিত্তিক টিউশন জব পাওয়া যায়। ইংরেজি, গণিত এবং বিজ্ঞান বিভাগের বিষয় গুলোতে বেশি পরিমাণে টিউশন জব পাওয়া সম্ভব।
সব থেকে ভালো হয় যদি আপনি Teacher on এবং tutotiaa ওয়েবসাইটে টিউটর হিসেবে জব করতে পারেন। এখান থেকে আপনি তিন থেকে চারটি টিউশন করালে মাসে অনায়াসে ভালো একটা ইনকাম জেনারেট করতে পারবেন।
আপনার যোগ্যতা থাকলে অবশ্যই কাজ পাবেন এবং পেমেন্ট পাবেন। তবে এখানে এই ওয়েবসাইট গুলোর মাধ্যমে টিউশন জব করাতে আপনাকে গ্রাজুয়েশন বা অনার্স কমপ্লিট করতে হবে না। আপনি এসএসসি বা ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেও অনেক জব পাবেন।
আরো পড়ুন: ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য অনলাইনে আয় করার উপায়
৭. গ্রাফিক ডিজাইন
গ্রাফিক ডিজাইন করে মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করার জন্য নির্দিষ্ট কোন প্রতিষ্ঠানে গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে চাকরি করতে পারেন, অনলাইনে রিমোট জব করতে পারেন, অথবা আপনার করা ডিজাইন বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে সেল করতে পারেন।
এছাড়া নিজের এজেন্সি তৈরি করে, Fiverr সহ বিভিন্ন ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস থেকে কাজ নিয়ে করতে পারেন। ছবি ও ডিজাইন তৈরি করে Freepik ও Shutterstock এসব সাইটে সেল করতে পারেন। বাংলাদেশেও এখন নতুন কয়েকটি ডিজাইন সেল করার প্ল্যাটফরম রয়েছে।
গ্রাফিক ডিজাইনের মাধ্যমে শুরুতেই আপনি অনলাইন থেকে মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করতে পারেন।
৮. ব্লগিং করে টাকা ইনকাম
আপনি কোন বিষয়ে অভিজ্ঞতা ও আগ্রহ থাকলে একটি ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে কনটেন্ট বা আর্টিকেল লিখতে পারেন। যখন আপনার ব্লগের ভিজিটর বৃদ্ধি পাবে, Google Adsense বা অন্য কোন Ad Network এর মাধ্যমে ব্লগে বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে আয় করতে পারেন।
ব্লগিং একটি জনপ্রিয় প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া। অর্থাৎ ব্লগ থেকে আয় করতে হলে, আপনাকে সবসময় কাজ করতে হবে না। আপনি আজ যে কনটেন্ট লিখবেন তা থেকে আগামী কয়েক বছরও আয় করতে পারবেন।
শুনতে খুব সহজ মনে হলেও, ব্লগিং খুব সহজ কিছু নয়। ব্লগিং করতেও আপনার কয়েক Skills অবশ্যই থাকতে হবে। ব্লগের টপিক নিয়ে নলেজ থাকার পাশাপাশি ওয়ার্ডপ্রেস সাইট ম্যানেজমেন্ট, Niches রিচার্স, কনটেন্ট রাইটিং, সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন এসব বিষয়ে প্রাথমিক ধারনা থাকতে হবে। বাকিটা ধীরে ধীরে শিখে নিতে পারবেন।
আরও পড়তে পারেন – যেভাবে ব্লগিং শুরু করবেন।
একটি ব্লগ থেকে আয় শুরু করার জন্য আপনাকে কমপক্ষে ৬ মাস থেকে ১ বছরের পরিকল্পনা নিয়ে শুরু করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে ব্লগ থেকে আয় শুরু হতেও পারে আবার এর চেয়ে বেশি সময়ও লাগতে পারে।
তবে ব্লগ থেকে আয় ছোটখাট কোন আয় নয়, মাসিক ৩ লক্ষ ভিজিটর থাকলে আপনি বাংলা ব্লগ থেকে প্রতি মাসে ১ থেকে দেড় লক্ষ টাকা আয় করতে পারবেন।
তাই, টাকা ইনকাম করার জন্য ব্লগিংয়ে ঝাঁপ না দিয়ে, বড় পরিকল্পনা, শেখার ও লেগে থাকার ইচ্ছা শক্তি নিয়ে ব্লগিং শুরু করা উচিত।
৯. ইউটিউব থেকে টাকা আয়
মানসম্মত ভিডিও কনটেন্ট বানিয়ে সেগুলো ইউটিউবে আপলোড করে টাকা ইনকাম করা যায়। YouTube ভিডিও মনিটাইজেশন অন হলে Google AdSense এর মাধ্যমে ইনকাম করা সম্ভব।
তবে আপনি প্রতি মাসে কত টাকা পাবেন এটা নির্ভর করবে আপনার ভিডিওতে ভিউ ও চ্যানেল সাবস্ক্রাইব এর উপর। ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করার ৭ উপায় ভালোভাবে পড়ুন। তাহলে আপনি ভালো মানের ইউটিউব কনটেন্ট বানাতে পারবেন ফলে ইনকাম বেশি হবে।
১০. ফেসবুক থেকে ইনকাম
ইউটিউবের মতো ফেসবুকেও ভিডিও আপলোড করে টাকা ইনকাম করা যায়। আপনার নিজস্ব ফেসবুক পেজে ভিডিও কনটেন্ট আপলোড করতে হবে।
ফেসবুক থেকে আয় করার সেরা উপায় গুলো সম্বন্ধে আগে ভালোভাবে জেনে নিবেন তারপর ভিডিও বানাবেন এতে ভিডিও এর রিচ বাড়বে। তবে ফেসবুক পেজে ভিডিও আপলোড করা ছাড়াও ফেসবুক থেকে আয় করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে।
ফেসবুকে আয় সংক্রান্ত আরও তথ্য:
স্ক্যাম এলার্ট: অনলাইনে টাকা ইনকাম করার সহজ উপায়
ফ্রি টাকা ইনকাম
ফ্রি টাকা ইনকাম নিয়ে অনলাইনে অনেক স্ক্যামার দেখা যায়। অনলাইনে টাকা ইনকাম করা নিয়ে করার আমাদের সবার মধ্যে একটা বড় আগ্রহ কাজ করে। এটাকে পুঁজি করে এক শ্রেণীর ধান্দাবাজ আপনাকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলতে প্রস্তুত। মনে রাখবেন কেউ কাউকে ফ্রিতে কোনদিন টাকা দেয় না। অনেকেই ফ্রি টাকা ইনকাম করার বিভিন্ন অ্যাপের কথা বলে যেমন-
- গেম খেলে টাকা ইনকাম
- স্পিন করে টাকা ইনকাম
- লটারি খেলে টাকা ইনকাম
মূলত এই ধরনের ফ্রি ইনকাম অ্যাপ গুলোতে যুক্ত হলে নিজের সময়, শ্রম, অর্থ সবকিছুই নষ্ট হয়। এগুলো থেকে তেমন কোনো ইনকাম করা যায় না। প্রথম দিকে আপনাকে বিভিন্ন লোভ দেখিয়ে আপনার টাকা হাতিয়ে নিবে।
অ্যাড দেখে টাকা ইনকাম
অনেক সময় এ্যাড দেখে বা এড ক্লিক করে টাকা ইনকাম করা যায়। বিভিন্ন অ্যাপ বা ওয়েবসাইট এ ধরনের কাজের জন্য টাকা দেয়। কিন্তু এই কাজটা করা অনৈতিক। কেন বলছি?
কারণ আমরা জানি যে, কোন ওয়েবসাইট বা অ্যাপ এ বিজ্ঞাপন দাতা যখন তার বিজ্ঞাপন বা এড দেয় তখন তার লক্ষ্য থাকে তার ভিজিটররা পণ্যটি কিনবে কিন্তু আপনি একই মানুষ যখন বারবার সেই এড গুলো দেখবেন এবং এডে ক্লিক করবেন তখন সে বিজ্ঞাপনদাতার আর্থিক ক্ষতি হবে।
অর্থাৎ সে অ্যাড দেওয়ার জন্য টাকা দিলেও তার এড কার্যকারিতা পাচ্ছেনা। সুতরাং এটি নৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে কখনোই আপনার করা উচিত হবে না।
প্যারাগ্রাফ লিখে টাকা ইনকাম
ফেসবুকে প্রচারিত টাইপিং করে টাকা ইনকাম, প্যারাগ্রাফ লিখে টাকা ইনকাম এই ধরনের কাজের ফাঁদে পা দেবেন না। কারণ এগুলো সব প্রতারণা। প্রতারণার উদাহরণ দেখে নিন–
“একটি প্যারাগ্রাফ লিখে ১২০ টাকা, দুইটি লিখলে ২৪০ টাকা।” বলা হবে যে প্যারাগ্রাফ আপনাকে দেখে দেখে প্যারাগ্রাফ লিখতে হবে। এভাবে আপনাদের প্যারাগ্রাফ টাইপিং জব এর জন্য প্রলোভন দেখানো হবে।
এরপর এক্ষেত্রে আপনার কাছে ১২০-২০০ টাকা এড ফি চাওয়া হবে। কিন্তু এই এড ফি দেওয়ার পর হয় আপনাকে ব্লক করে দেওয়া হবে।
অথবা আপনার কাছ থেকে এড ফি নেওয়ার পর তাদের গ্রুপে আপনাকে জয়েন করানো হবে এবং বলা হবে আপনাকে যেভাবে প্যারাগ্রাফ লেখার জবের কথা বলে এখানে এড করা হয়েছে একইভাবে আপনাকেও মেম্বার অ্যাড করতে হবে।
এভাবে আপনি নতুন মেম্বার অ্যাড করতে পারলে আপনাকে একটি প্যারাগ্রাফ কপি করে পেস্ট করে দিতে হবে। তাহলেই নতুন মেম্বার এড এর জন্য অ্যাড ফি এর অর্ধেক টাকা আপনি পাবেন। এটা মূলত কোন প্যারাগ্রাফ টাইপিং জব না এটা একটা মেম্বার অ্যাড করা জব।
শেষকথা
মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করা যেন তেন ব্যাপার নয়। সিরিয়াসলি টাকা আয় করতে চাইলে, রিয়েল কোন ব্যবসা শুরু করুন। কোন ব্যবসা ছাড়া, বেশি টাকা আয় করার কোন উপায় নাই।
আপাতত ব্যবসা শুরু করার মত মুলধন বা দক্ষতা না থাকলে, দক্ষতা অর্জন করতে লেগে পড়ুন। আপনার মধ্যে স্কিল থাকলে, আপনি যে কোনভাবেই তা ক্যাশ করতে পারবেন।
আশা করি ব্লগটি আপনার ভাল লেগেছে। ভবিষ্যতে টাকা আয় ও ব্যবসা সম্পর্কিত আরও তথ্য পেতে আমাদের ব্লগটি নিয়মিত ভিজিট করুন, এবং ফেসবুকে ফলো দিয়ে রাখুন – MoneyAns।