ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি ২০২৫: কিভাবে আবেদন করবেন

প্রবাসীদের বিদেশ যাওয়ার ব্যয় মেটানোর সহজ সমাধান হতে পারে ইসালামী ব্যাংক প্রবাসী লোন। জানুন কত টাকা ঋণ পাবেন এবং ঋণের শর্ত ও আবেদনের পদ্ধতি বিস্তারিত।

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি

আপনি কি কাজের ভিসায় বিদেশ যাওয়ার জন্য ঋণ প্রয়োজন? তাহলে আপনি নিতে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন। জানুন কিভাবে ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রবাসী লোন নিবেন, কি কি লাগবে বিস্তারিত সকল তথ্য।

Highlights:

  • লোনের পরিমাণ ২ থেকে ১০ লক্ষ টাকা, ঋণ পরিশোধের সময় ২ থেকে ৫ বছর।
  • বিদেশগামী ব্যক্তি ও তার অভিভাবককে ঋণ দেয়া হবে, তবে বয়স ১৮ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে হতে হবে।
  • জামানত প্রয়োজন আছে এবং রিটার্নের পরিমাণ ৯% (পরিবর্তনশীল)

সাধারণত যারা কাজের সূত্রে বিদেশে যেতে ইচ্ছুক এবং যারা প্রবাসে অবস্থান করছে তাদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা করার জন্যই ইসলামী ব্যাংক ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক প্রবাসী লোন দিয়ে থাকে।

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের পদ্ধতি, শর্ত কি এবং কিভাবে আবেদন করবেন বিস্তারিত তথ্যের জন্য ব্লগটি সম্পূর্ণ দেখুন। আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন।

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন

ইসলামী ব্যাংক থেকে বিদেশগামী ও প্রবাসীদের জন্য কিছু সহজ শর্তে প্রবাসী লোন দেয়া হয় যেটিকে Overseas Employment Investment Scheme বা সপ্নযাত্রা নামে পরিচিত। অনেকে এই লোনকে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন হিসেবে বলে থাকেন।

এই ঋণের মাধ্যমে বিদেশে যাওয়ার খরচ সহজ করতে সহায়তা করা হয়। অর্থাৎ এই ঋণটি দেয়া হয় মূলত

  • চাকরির ভিসা/ওয়ার্ক পারমিট কেনার জন্য;
  • এজেন্সি ফি পরিশোধে;
  • বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য খরচে।

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে বিদেশগামী ব্যক্তির বয়স অবশ্যই সর্বনিম্ন ১৮ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ বছর হতে হবে এবং ইসলামী ব্যাংকের এই প্রবাসী লোনের ধরন হলো ইজারা মাউসুফাহ ফিদ-ধিম্মাহ বা Forward Ijara।

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের তথ্য

ইসলামী ব্যাংক বাদে বিকল্প হিসেবে আপনি চাইলে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নেয়ার কথাও ভাবতে পারেন।

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের বিস্তারিত

লোনের পরিমান২ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা
লোনের মেয়াদ২ লক্ষ পর্যন্ত – ২ বছর
২ লক্ষের বেশি – ৫ বছর
রির্টান হারবাৎসরিক ৯% (পরিবর্তনশীল)
লোনের ধরনForward Ijarah
লোন পরিশোধের ধরনমাসিক
জামানতব্যক্তিগত গ্যারান্টি, অ্যাডভান্স চেক, বন্ধক, লিয়েন, রেজিস্টার্ড মর্টগেজ ও পাওয়ার অব অ্যাটর্নি (যেখানে প্রযোজ্য)

ইসলামী ব্যাংক হলো বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাংক যেখান থেকে ইসলামী শরীয়ত অনুসারে বাংলাদেশের নাগরিকদের বিভিন্ন ধরনের লোন দেওয়া হয় এবং তারা কোনো রকম সুদ দেয়া নেয়া করে না বলে লোন এর পরিবর্তে ইনভেসমেন্ট শব্দটি ব্যবহার করে।

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন তাদের ইনভেসমেন্ট এর আওতাভুক্ত এবং এই প্রবাসী লোন সাধারণত ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী ইজারা মাউসুফাহ ফিদ-ধিম্মাহ অনুসারে হয়ে থাকে।

বাৎসরিক ৯% পরিশোধ যোগ্য হারে সর্বনিম্ন ২ লক্ষ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন নেয়া যায় এবং এক্ষেত্রে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন মেয়াদ সর্বোচ্চ ২ বছর এবং ২ লক্ষ টাকার বেশি হলে লোনের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ৫ বছর।

মাসিক কিস্তিতে এই লোন পরিশোধ করতে হবে এবং লোন নেওয়ার সময় অবশ্যই ব্যক্তিগত গ্যারান্টার বা জামানতদার, এডভান্স চেক, রেজিস্টারকৃত জমি অথবা অর্থ সম্পদের পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) জামানত হিসেবে দিতে হবে।

ইসলামী ব্যাংকের অন্যান্য ইনভেস্টমেন্ট: ইসলামী ব্যাংক খামার লোন

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নিতে কি কি লাগে?

ইসলামী ব্যাংক থেকে এই প্রবাসী লোন  নিতে হলে অবশ্যই আপনাকে ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহক হতে হবে অর্থাৎ ইসলামী ব্যাংকে আপনার একটি একাউন্ট থাকতে হবে এবং আপনার কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের প্রয়োজন পড়বে।

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নিতে যেসকল ডকুমেন্টস লাগবে-

  • ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন এর আবেদন ফরম;
  • এনআইডি কার্ড এর কপি;
  • পাসপোর্ট ও ভিসার কপি;
  • ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।

ইসলামী ব্যাংক ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংক প্রবাসীদের লোন অফার করে। এসব ব্যাংকের প্রবাসী লোন সম্পর্কে জানতে দেখুন এই ব্লগ – কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয়

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের পদ্ধতি

ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রবাসী লোন নেওয়া খুব একটা জটিল বিষয় নয় তবে লোন নেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।

চলুন তাহলে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন এর পদ্ধতি ধাপে ধাপে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেয়া যাক।

ধাপ ১ – ব্যাংকে যোগাযোগ করুন

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পাওয়ার জন্য প্রথমেই আপনাকে ইসলামী ব্যাংকের নিকটস্থ ব্যাংকে লোনের ব্যাপারে যোগাযোগ করতে হবে এবং লোনের সকল শর্ত ও আবেদনের নিয়ম কানুন জেনে নিতে হবে।

আপনার যদি ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খোলা না থাকে তাহলে লোনের আবেদন করা জন্য অবশ্যই আপনাকে আগে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ইসলামী ব্যাংকে একটি একাউন্ট খুলতে হবে।

ধাপ ২ – লোন ফরম পূরণ করুন

লোনের জন্য ব্যাংকে যোগাযোগ করার পর আপনাকে ব্যাংক থেকে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন ফরম সংগ্রহ করতে হবে এবং আবেদন ফরমটি আপনার সকল প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে।

প্রবাসী লোনের আবেদন ফরম অবশ্যই সঠিক ও নির্ভুল ভাবে পূরণ করতে হবে কেননা তথ্য সঠিক না হলে আপনার লোনের আবেদন বাতিলও হয়ে যেতে পারে।

ধাপ ৩ – প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জমা দিন

লোনের আবেদন ফরম পূরণ করার পর তা ব্যাংকে জমা দিতে হবে এবং একই সাথে লোনের আবেদনের জন্য ব্যাংক থেকে নির্ধারিত আপনার সকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসও জমা দিতে হবে।

আপনার সকল ডকুমেন্টস জমা দেওয়ার আগে অবশ্যই আপনাকে সকল তথ্য সঠিক ও নির্ভুল কিনা তা নিশ্চিত করে নিতে হবে।

ধাপ ৪ – অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করুন

প্রবাসী লোনের জন্য আপনার সকল কাগজপত্র ও পূরণকৃত আবেদন ফরম ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়ে গেলে  এরপর আপনাকে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন এর অনুমোদন পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

ব্যাংক থেকে আপনার সকল কাগজপত্র ও তথ্য যাচাই-বাছাই করার পর সবকিছু ঠিক থাকলে ৩ থেকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যেই আপনার লোনটি অনুমোদিত হবে।

ধাপ ৫ – লোন সংগ্রহ করুন

আপনার প্রবাসী লোনের আবেদন অনুমোদিত হলে লোনের টাকা সংগ্রহের তারিখ আপনাকে মোবাইলে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে।

নির্ধারিত দিনের ইসলামী ব্যাংকের নিকটস্থ শাখায় গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দেখিয়ে আপনি নগদ লোনের টাকা সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।

এভাবে উপরোক্ত ধাপ গুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করে আপনারা খুব সহজেই ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন এর জন্য আবেদন করতে পারবেন এবং প্রবাসী লোন পেতে পারবেন।

FAQs

কাজের উদ্দেশ্যে বিদেশ যেতে ইচ্ছুক এমন ব্যক্তি ও তার অভিভাবক এই ঋন নিতে পারবেন। বিদেশগামী ব্যক্তির বয়স অবশ্যই ১৮ থেকে ৪৫ এর মধ্যে হতে হবে।

ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রবাসী লোন হিসেবে সর্বনিম্ন ২ লক্ষ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন দিয়ে থাকে।

ঋণের পরিমাণ ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হলে ২ বছর এবং, ২ লক্ষের অধিক হলে ৫ বছর।

Information Source: Overseas Employment Investment Scheme

Similar Posts

মন্তব্য করুন