১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া

আপনি কি স্বল্প পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে চাচ্ছেন? এখানে জেনে নিন, ১০ হাজার টাকায় ২৫ ব্যবসার আইডিয়া যেগুলো আপনি ২০২৩ সালে করতে শুরু করতে পারেন।

Advertisement

বাংলাদেশে বেকারত্ব একটি বড় সমস্যা। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, বেকার যুবক, বিদেশ থেকে আগত বেকার যুবকদের মাঝে অনেকেই খুজে থাকি স্বল্প পুঁজিতে করা যায় এমন ব্যবসা। আপনি যদি সঠিক ব্যবসা নির্বাচন করতে পারেন তাহলে অল্প টাকায় বা বিনা পুঁজিতেও ব্যবসা করে লাভবান হতে পারবেন।

১০ হাজার টাকায় ব্যবসার আইডিয়া অনেক হতে পারে। তবে আমি বর্তমান সময়ে সব জায়গায় করা যাবে এমন যুগোপযোগী ২৫টি ব্যবসায় আইডিয়া আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি।

১০ হাজার টাকায় ব্যবসায় আইডিয়া

বর্তমানে ১০ হাজার টাকায় আপনি অনলাইন ফুড ডেলিভারি, ব্লগিং, লন্ড্রী বা ক্লিনিং সার্ভিস, জুস বার ও কাগজের ব্যাগ তৈরির ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এসব ব্যবসার চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এই ব্যবসাগুলোতে Profit Margin অনেক বেশি।

আরও পড়ুন:

আসুন দশ হাজার টাকায় শুরু করতে পারবেন এমন কিছু ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।

Advertisement

১. অনলাইনে খাবার বিক্রি

১০ হাজার টাকায় ব্যবসার আইডিয়া হিসেবে প্রথমেই আমি রাখব অনলাইন ফুড বিজনেস। এটি একটি ঘরোয়া ব্যবসা হিসেবে বিপুল জনপ্রিয়। দুই তিন বছর আগেও এটা এতটা জনপ্রিয় ছিল না। এখন নারী পুরুষ অনেকেই ঘরে বসে অনলাইনে খাবার বিক্রয়ের ব্যবসা করছে।

ব্যস্ততার এই যুগে নারী পুরুষ সবাই বাইরে কাজ করে। তাই সব সময় পরিবারের জন্য ঘরে রান্না করা সম্ভব হয়ে উঠে না। তাছাড়া বিভিন্ন ছোটখাট অনুষ্ঠান, জন্ম দিন, বিবাহ বার্ষিকী এসব অনুষ্ঠানে কেকসহ বিভিন্ন খাবার আপনি বাসায় তৈরি করে হোম ডেলিভারী করতে পারেন।

অনলাইনে খাবারের ব্যবসা

কিভাবে অনলাইনে ফুড বিজনেস শুরু করবেন

  • অনলাইনে ফুড বিজনেস শুরু করার জন্য আপনাকে একটি Facebook Business Page প্রস্তুত করতে হবে।
  • লোকাল কোন ডেলিভারী প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নিতে হবে।
  • লোকাল ডেলিভারী প্রতিষ্ঠান বা ডেলিভারী ম্যান না থাকলে, অনলাইনে খাবার বিক্রয় করার অ্যাপ ও সাইট ব্যবহার করতে পারেন।
  • অনলাইনে ফুড বিজনেসে আপনার কাস্টমার হবে স্থানীয় কাস্টমার। খাবার প্রস্তুতের পর ৩০ মিনিটের মধ্যে ডেলিভারী দেয়া যাবে এমন দুরত্বের স্থানের মধ্যেই আপনার কাস্টমার নিতে হবে।

ঘরে খাবার তৈরি করে অনলাইনে বিক্রয় করার অ্যাপসমূহ

২. ব্লগিং

১০ হাজার টাকায় ব্যবসার আইডিয়া হিসেবে এরপর রেখেছি ব্লগিং। যদি আপনার এ বিষয়ে আগ্রহ ও যোগ্যতা থাকে এটি অবশ্যই বর্তমান সময়ের জন্য একটি ভাল ব্যবসা হবে।

ব্লগিং হচ্ছে মানুষ অনলাইনে সার্চ করে এমন কোন বিষয়ে লেখালেখি করা। বর্তমানে মানুষ অনেক সমস্যা নিয়ে অনলাইনে সার্চ করছে। সেইসব বিষয়ে যদি আপনার ভাল জানাশোনা ও আগ্রহ থাকে আপনি এসব বিষয়ে কনটেন্ট লিখে তথ্য শেয়ার করতে পারেন ব্লগের মাধ্যমে।

Advertisement

যখন আপনার ব্লগে অনেক ভিজিটর আসবে, ব্লগে গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্য বিজ্ঞাপন দেখানো, এফিলিয়েট মার্কেটিং, স্পন্সরড কনটেন্ট, প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সেল করার মাধ্যমে আপনি আয় করতে পারবেন।

আপনি চাইলে একই ব্লগ থেকে সব উপায়ে আয় করতে পারেন। ব্লগিংয়ের সবচেয়ে সুবিধা হলো এটি আপনি পার্ট টাইম ব্যবসা হিসেবে নিতে পারবেন।

হয়তো মনে প্রশ্ন আসবে ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়। সঠিক কৌশল অবলম্বন করে ফুল টাইম ব্লগিং করলে আপনি ৩ মাসের মধ্যে প্রতি মাসে ১০ হাজার বা তার বেশি টাকা আয় করতে পারবেন। ব্লগে যত বেশি ভিজিটর বৃদ্ধি পাবে আপনার আয় ও বৃদ্ধি পাবে।

কিভাবে ব্লগিং শুরু করবেন

প্রথমে ব্লগিংয়ের জন্য কোন একটি টপিক বাছাই করতে হবে। এবার টপিক অনুসারে পছন্দ মত একটি ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করুন। Google এর ফ্রি Blogger.com বা Hosting ক্রয় করে WordPress এর মাধ্যমে খুব সহজেই একটি ব্লগ তৈরি করতে পারেন।

Advertisement

৩. লন্ড্রি ও ক্লিনিং সেবা

এখন ব্যস্ততার কারণে প্রত্যেকের নিজের কাপড় ধোয়া ও আয়রন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। আপনার এলাকায় লন্ড্রি ও ক্লিনিং সেবা থাকলেও আপনি আরও কিছু বাড়তি সুবিধা দিয়ে একটি ব্যতিক্রমী আধুনিক লন্ড্রী ব্যবসা চালু করতে পারেন।

এই ব্যবসার জন্য আপনার প্রয়োজন হবে না কোন দোকানঘর। আপনি আপনার বাসা বাড়ি থেকেই এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন। পরে কাস্টমার বৃদ্ধি পেলে একটি বড় ঘর ভাড়া করতে পারবেন।

যেভাবে লন্ড্রী ব্যবসা শুরু করবেন

এ ব্যবসায়ে আপনার কমপক্ষে ২/৩ জন লোকবল লাগবে। লোকবল থাকলে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে আধুনিক লন্ড্রী ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

  • ২টি আয়রণ মেশিন, আয়রন করার জন্য বড় টেবিল ও অন্যান্য সরঞ্চাম প্রস্তুত করুন।
  • নিজের বাড়িতে একটি বড় কক্ষ থেকে শুরু করতে পারেন।
  • একটি Facebook Page তৈরি করুন এবং কাস্টমারের সাথে যোগাযোগের জন্য Whatsapp একাউন্ট খুলুন।
  • এলাকার বিভিন্ন বাসা থেকে স্বশরীরে ভিজিট করে আপনাদের সেবা সম্পর্কে জানান এবং কাপড় সংগ্রহ করুন।
  • কাপড় পরিস্কার করে তা সুন্দরভাবে বাসায় ডেলিভারী করুন।
  • এভাবে দিন দিন আপনাদের ভাল সেবার কারণে কাস্টমার বৃদ্ধি পাবে।

৪. জুসবার

গ্রীস্মের প্রচণ্ড গরমে একটু ঠান্ডা ফলের জুস অনেক চাহিদা সম্পন্ন। স্কুল, কলেজ, অফিস, স্থানীয় বাজার কিংবা জনবহুল এলাকায় আমরা ফলের রস বিক্রেতাদের দেখতে পাই। ১০ হাজার টাকায় কয়েকটি ব্যবসায় আইডিয়া থেকে এই ব্যবসায় উপার্জন অনেক বেশি।

আম, তরমুজ, আনারসের জুস, দুধ ও কলার মিল্কশেক, লেবুর শরবত ইত্যাদি উপাদান নিয়ে আপনিও তৈরি করতে পারেন একটি জুসবার।

জুসবারের ব্যবসায় প্রয়োজন হবে:

  • স্থান বাছাই করে একটি টেবিল ও চেয়ার স্থাপন ১-২ হাজার টাকা।
  • সাধারণ ফিল্টার, ছুরি, গ্লাস, কাটার বোর্ড ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ৪-৬ হাজার টাকা।
  • প্রাথমিক কাঁচামাল হিসেবে বিভিন্ন ফল ২-৪ হাজার টাকা।

পরবর্তীতে, ভ্রাম্যমান ভ্যান নিয়ে ব্যবসা ত্বরান্বিত করতে পারবেন। এ ব্যবসায় পুজির তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ লাভ হয়।

৫. মুদি মাল ও ঔষধের হোম ডেলিভারি

খাদ্যদ্রব্য এবং ঔষধ আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয়। অনেক সময় আমাদের কাজের ব্যস্ততার কারণে বাজার থেকে মুদি মাল ক্রয় করা বা প্রয়োজনীয় ঔষধ কেনার সময় পাওয়া যায় না। অথবা বাসার আশে পাশের দোকানে প্রয়োজনীয় পন্য বা ঔষধ পাওয়া যায় না।

এই সমস্যা দূর করতে আপনি নিত্য প্রয়োজনীয় মুদি পন্য ও জরুরী ঔষধের হোম ডেলিভারী সার্ভিস শুরু করতে পারেন।

এই ব্যবসায়ে শুরুতে আপনি প্রোডাক্ট স্টক করতে পারবেন না। কাস্টমার থেকে অর্ডার নিয়ে নিকটস্থ কোন পাইকারী ব্যবসায়ীর কাছ থেকে পন্য সংগ্রহ করে ডেলিভারী করবেন।

মুদি পন্য ও ঔষধের হোম ডেলিভারী ব্যবসার মুনাফা

এই ব্যবসায়ে আপনার লাভ হচ্ছে ২টি ডেলিভারী চার্জ বাবদ আয় এবং পন্য বিক্রয় বাবদ কমিশন। এছাড়া পাইকার থেকে কম মূল্যে পন্য সংগ্রহ করতে পারলে আপনি কাস্টমারকে কম দামে বা ডিসকাউন্ট অফার করে প্রোডাক্ট সেল করতে পারবেন।

শুরুতে যদি আপনি প্রোডাক্ট স্টক করতে না পারেন, পন্য বিক্রয় বাবদ খুব একটা কমিশন পাবেন না। কারণ স্থানীয় কোন খুচরা ব্যবসায়ী/ পাইকার থেকে আপনি যে কমিশন পাবেন তার পরিমাণ খুব বেশি নয়। এই কমিশনের কিছু অংশ আপনার ক্রেতাকে ডিসকাউন্ট দিলে আপনার জন্য আর তেমন কিছু থাকবে না।

তাই শুরুতে শুধুমাত্র ডেলিভারী সার্ভিস বাবদ আয়ের উপর নির্ভর করে আপনার ব্যবসা চালিয়ে যেতে হবে। ভবিষ্যতে কাস্টমার বৃদ্ধি পেলে অধিক চাহিদা আছে এমন প্রোডাক্ট গুলো স্টক করতে পারবেন।

কিভাবে হোম ডেলিভারি ব্যবসা শুরু করবেন

হোম ডেলিভারি ব্যবসা শুরুর আগে নিম্নিলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনায় আনতে হবে:

  1. হোম ডেলিভারি ব্যবসার জন্য একটি নাম বাছাই করুন এবং সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করুন
  2. হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন অর্ডার প্রসেস করার জন্য।
  3. হোম ডেলিভারি দেয়ার জন্য শুরুতেই লোক নিয়োগ করতে হবে।
  4. শুরুতে নির্দিষ্ট একটি লোকেশনে এ সেবা দিতে পারেন।
  5. লোকেশন অনুযায়ী বড় কিছু খুচরা বিক্রেতা/ পাইকারের সাথে Collaborate করতে হবে যাতে আপনাকে ডিসকাউন্ট প্রাইসে মুদি পন্য ও ঔষধ সরবরাহ করা হয়। ফলে আপনিও কাস্টমারকে ডিসকাউন্ট অফার করতে পারবেন।
  6. সার্ভিস যেন সঠিকভাবে পরিচালিত হয় এবং ডেলিভারি যেন নির্বিঘ্নে পরিচালিত হয় সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

৬. ন্যাচারাল বিউটি প্রোডাক্ট

অনলাইন মার্কেটিং জগতে সবচেয়ে বেশি মূল্যে বিক্রি হয় বিউটি প্রোডাক্টগুলো। বিস্তারিত ধারণা নিয়ে বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্ত ও গুণসম্পন্ন বিউটি প্রোডাক্ট তৈরি করে কিংবা অন্য কোন প্রতিষ্ঠান থেকে ক্রয় করে অধিক দামে বিক্রি করতে পারবেন। এটি একটি উৎপাদনমুখী ব্যবসার আইডিয়া।

বহু মানুষ এ ধরনের পণ্যের অনলাইন মার্কেটিং করে অনেকটাই উপার্জন করছেন। মার্কেটিং সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকলে পরবর্তীতে মাসে লক্ষ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারবেন।

ন্যাচারাল বিউটি প্রোডাক্ট ব্যবসা করতে যা লাগবে

  • গুণসম্মত প্রাকৃতিক উপাদান (অর্শগন্ধা, মধু, বিভিন্ন পাতার নির্যাস ইত্যাদি) ৫-৮ হাজার টাকা।
  • একটি ফেসবুক পেইজ।
  • অনলাইন মার্কেটিং সম্পর্কে ধারনা প্রয়োজন হবে।

উপরোক্ত ব্যবসাগুলো স্বল্প পুঁজি বা বিনা পুঁজিতে অনলাইনে করতে পারবেন। এছাড়াও অনলাইনে ১০ হাজার টাকায় কয়েকটি ব্যবসায় আইডিয়া খুঁজলে অনেক ব্যবসায় পাবেন।

৭. কাগজের ব্যাগ উৎপাদন 

আরও একটি উৎপাদনমুখী ব্যবসার আইডিয়া হচ্ছে কাগজের ব্যাগ তৈরি করা। কাগজের ব্যাগের চাহিদা সর্বত্রই রয়েছে। তবে সময়ের সাথে সাথে এই ব্যবসায় লোকের সংখ্যা কমে গেলেও কাগজের ব্যাগের চাহিদা কমেনি। বিভিন্ন বেকারি, ফলের দোকান, রেস্টুরেন্টে কাগজের ব্যাগের চাহিদা অনেক বেশি।

বাংলাবাজার ও অন্যান্য পাইকারি বাজার থেকে কম মূল্যে কাগজ ক্রয় করে তা দিয়ে ব্যাগ তৈরি করে স্থানীয় বাজারের দোকান গুলোতে সরবরাহ করতে পারেন।

কাগজের ব্যাগ উৎপাদন ব্যবসা করতে প্রয়োজন হবে-

  • বিপুল পরিমাণ কাগজ ৩-৪ হাজার টাকা।
  • আঠা, কাটার ও অন্যান্য উপাদান ৫০০-১,০০০ টাকা।
  • অধিক ব্যাগ উৎপাদনের জন্য লোকবল ৩-৪ হাজার টাকা।

১০ হাজার টাকায় কয়েকটি ব্যবসায় আইডিয়া থেকে  এটি বেছে নিয়ে দিনে অল্প কিছু সময় কাজ করেই স্থানীয় বাজারে দোকানগুলোর কাগজের ব্যাগের চাহিদা পূরণ করে ভালো উপার্জন করতে পারবেন।

৮. মধু উৎপাদন 

বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমানিত অত্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মত এবং বিভিন্ন গুণসম্পন্ন খাদ্য উপাদান মধু। প্রাকৃতিক মধুর চাহিদা সমত্রই অনেক বেশি। আপনার বাড়ির পাশে ছোট একটি জায়গা নিয়েও মধু চাষ শুরু করতে পারেন। 

চাষকৃত মধু উচ্চ দামে অনলাইনে বা অফলাইনে বিক্রি করতে পারবেন। বর্তমানে প্রতি কেজি প্রাকৃতিক মধু ৫০০-৯০০ টাকা মূল্যে বিক্রি করা যায়।

মধু উৎপাদন করে ব্যবসায় শুরু করতে প্রয়োজন হবে-

  • মৌমাছি (প্রাথমিকভাবে ছোট পরিসরে) ৮০০-১,৫০০ টাকা।
  • মধু চাষের জন্য খাঁচা ৩-৪ হাজার টাকা।
  • সূর্যমুখী, সরিষা ইত্যাদি ফুলের আশেপাশে হালকা প্রসারিত জায়গা।
  • অনলাইন ব্যবসার জন্য একটি ফেসবুক পেইজ।
  • পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা।

উৎপাদন্মুখী ব্যবসায় হওয়ায় ভবিষ্যতে বৃদ্ধি করার জন্য ১০ হাজার টাকায় কয়েকটি ব্যবসায় থেকে এটি অন্যতম।

৯. বায়োগ্যাস উৎপাদন

বর্তমানে গ্যাসের খরচ অনেক বেশি। দেশের সর্বত্র গ্যাস সরবরাহ নেই এবং LPG গ্যাসের দাম বেশি হওয়ায় সকলের জন্য ব্যবহার করা সম্ভব হয় না। 

আপনি যদি একজন কৃষক হয়ে থাকেন কিংবা আপনার আশেপাশের গবাদিপশু পালনকারীদের কাছ থেকে গোবর ও অন্যান্য জৈব উপাদান সংগ্রহ করতে পারেন তাহলে একটি বায়োগ্যাস প্লান্ট তৈরি করে উপার্জন করতে পারবেন।

খুবই কম পুঁজি নিয়ে বায়োগ্যাস প্লান্ট তৈরি করা যায়। নিজের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আশেপাশে মানুষের কাছে বিক্রি করা যায়। ১০ হাজার টাকায় কয়েকটি ব্যবসায় আইডিয়া এর মধ্যে এটি যুগোপযোগী।

বায়োগ্যাস সাপ্লাই ব্যবসার জন্য প্রয়োজন হবে

  • একটি বড় পানির ট্যাংক, পাইপ, গ্যাস সাপ্লাই ব্যবস্থার জন্য ৭-৮ হাজার টাকা।
  • জৈব পদার্থ সংগ্রহ ও ব্যক্তিগত পরিশ্রম।

এটি একবার স্থাপন করলেই শুধু গোবর দিয়ে সবসময় গ্যাস তৈরি করতে পারবেন।

১০. অনলাইনে হস্তশিল্প বিক্রি

আগেকার দিনে হস্তশিল্প বলতে আমরা হাড়ি, ঝুড়ি, মাটির কলস ইত্যাদি উপাদানকে বুঝলেও বর্তমানে হস্তশিল্পের পরিধি ব্যাপক। নানারকম কারুকার্যময় ভাবে এখন তৈরি হচ্ছে ফুলদানি, হাত ব্যাগ, পাখা, পুতুল, নকশি মঠ, হাতের কাজ করা পোশাক, বাহারি রকমের শোপিস সহ হাজারো নতুন নতুন হস্তশিল্পের উদ্ভাবন। বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতির সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প হচ্ছে নকশি কাঁথা। 

এ সকল উপাদান তৈরিতে যদি আপনি পারদর্শী হোন তাহলে আপনার তৈরি করা হস্তশিল্প অনলাইনে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিক্রি করতে পারবেন। এ সকল পণ্যের বাজার চাহিদা ও মূল্য অনেক বেশি। পারদর্শী না হলেও প্রশিক্ষন নিতে পারেন দক্ষ কারো কাছে।

হস্তশিল্পের ব্যবসার জন্য আপনার খরচ হবে:

  • হস্তশিল্পের প্রাথমিক কাঁচামাল (ব্যবসার ধরন অনুযায়ী) ২-৬ হাজার টাকা।
  • প্রশিক্ষণ সম্মানী ২-৪ হাজার টাকা। (প্রয়োজন হলে)

১০ হাজার টাকায় কয়েকটি ব্যবসায় আইডিয়া থেকে এটি বেছে নিয়ে অনলাইনে ছাড়াও স্থানীয় বাজারে এবং বিভিন্ন উৎসব-মেলায় বিক্রি করতে পারবেন। 

১১. অনলাইন টিউটর

কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টদের জন্য উপার্জনের প্রধান উৎস টিউটরিং। তবে প্রযুক্তির এই যুগে অনলাইনে লাইভ ক্লাসের চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের স্টুডেন্টদের অনলাইন টিউটরিং করে ভালো উপার্জন করতে পারবেন। 

ফেসবুকে বেশ কিছু টিউটরিং সার্ভিস প্রোভাইডার গ্রুপ ও পেইজ রয়েছে। সেগুলোতে একটিভ থাকলে স্টুডেন্ট পাবেন তাড়াতাড়ি। এছাড়াও ভিডিও ক্লাস তৈরি করে ইউটিউবে পাবলিশ কিংবা সরাসরি বিক্রি করতে পারবেন। ১০ হাজার টাকায় কয়েকটি ব্যবসায় আইডিয়া খুজে থাকলে এটি করতে পারবেন বিনা পুজিতেই।

অনলাইন টিউটর হতে আপনার যা লাগবে

  • কোন অর্থের প্রয়োজন হয় না, শুধুমাত্র নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা;
  • একটি স্মার্টফোন;
  • শিক্ষাদানের মত যোগ্যতা ও মানসিকতা।

১২. ট্যুর গাইড 

আপনি যদি ভ্রমন করতে ভালোবাসেন এবং বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকলে ট্যুর গাইড হিসেবে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। বিভিন্ন প্রান্তের দর্শনীয় স্থানগুলোতে যাওয়া, থাকা, খাবারের ব্যবস্থা ও টুরিস্টদের সাথে ভ্রমণের গাইড সম্পর্কিত প্যাকেজ তৈরি করে অধিক মূল্যে ট্যুর সেবা প্রদান করতে পারেন।

একজন ট্যুর গাইড হতে প্রয়োজন হবে:

  • বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে ভালো ধারণা;
  • হোটেল, রিসোর্ট ও পরিবহন ব্যবস্থার সাথে সম্পর্ক;
  • বিশ্লেষণ করার দক্ষতা।

বিভিন্ন প্যাকেজ তৈরি করতে প্রাথমিকভাবে নিজেকে প্যাকেজ ক্রয় করতে হবে তারপর টুরিস্টদের কাছে অধিক মূল্যে বিক্রি করতে পারবেন।

১৩. বিউটিশিয়ান

দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ থাকলে খুবই অল্প টাকা বিনিয়োগ করে বাড়িতেই বিউটি পার্লার ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার প্রথমত প্রয়োজন হবে মেকাপ উপকরণসমূহ এবং কিছু জরুরী টুলস। সব মিলিয়ে ১০ হাজার টাকায় ব্যবসাটি শুরু করা যাবে।

নিজের ঘর থেকেই সেবা দেয়ার পাশাপাশি, বাড়িতে গিয়ে, সাজানো, হেয়ার কাটিং, ফেসিয়াল, পেডিকিওর, ম্যানিকিওর, অয়েল ম্যাসাজ বা ওয়্যাক্সিংয়ের মত সেবা দিতে পারেন। বর্তমানে সবাই ব্যস্ততার কারণে ঘরেই এসব সেবা নিতে আগ্রহী।

কাস্টমারের অর্ডার নেয়ার জন্য চালু করতে পারেন, ফেসবুক পেইজ, Whatsapp বা একটি সুন্দর Website।

Updating….

FAQ’s

কম বাজেটে রিস্ক ফ্রি ব্যবসা কোনটি?

হস্তশিল্প তৈরি, মোবাইল রিচার্জ, ই-কমার্স সাইটের রিসেলার, অনলাইন টিউটর, লন্ড্রি ও ক্লিনিং, মধু উৎপাদন, বায়োগ্যাস উৎপাদন ইত্যাদি কম বাজেটের ঝুঁকিমুক্ত ব্যবসা।

১০ হাজার টাকায় উৎপাদনমুখী ব্যবসা কি কি?

১০ হাজার টাকায় মধু, বায়োগ্যাস, LED লাইট, চার্জার, কাগজের ব্যাগ ইত্যাদি উৎপাদনমুখী ব্যবসায় করতে পারেন।

কম বাজেটে কি কি ব্যবসা করা যায়?

কম বাজেটে অনলাইনে খাবার বিক্রয়, ব্লগিং ও ইউটিউবিং, হস্তশিল্প, জুসবার, মুদি মালের হোম ডেলিভারি, লন্ড্রি ও ক্লিনিং, মধু চাষ, কাগজের ব্যাগ তৈরি ইত্যাদি ব্যবসায় করতে পারেন।

শেষকথা

উপরোক্ত ব্যবসাগুলোর খরচ বর্তমান বাজারের উপর নির্ভরশীল। এই আলোচনার ১০ হাজার টাকায় কয়েকটি ব্যবসায় আইডিয়া থেকে আপনার পছন্দের ব্যবসাটি বেছে নিয়ে বিস্তারিত তথ্য জেনে ব্যবসা শুরু করুন আজই, ধন্যবাদ।

ব্যবসা সংক্রান্ত আরও তথ্য

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *